Friday 3 August 2018

।। মনে হয়েছিল, মানুষের কাছে নিজের কথা, বিশ্বাস, স্বপ্ন আর স্বপ্নভঙ্গ নিয়ে পৌঁছোনো দরকার: সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়


সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায় 



আলাপন

কবিতা আশ্রম: আপনার কবিতা-যাপন কতদিনের?
সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়: কবিতা বহুকালই নিজের জন্যে লিখতাম। ছাপানো শুরু করেছিলাম দেরি করে, তাও ১১ -১২ বছর হয়ে গেল, ঘটে গেল বহু রদবদল, ভাঙচুর, ছায়া হয়ে গেল বহু উপকথা। সাতটা বই জুড়ে কী যে লিখে গেলাম বুঝি না, বোধহয় কিছুই না, ‘তোমার কবিতা থেকে যাবে’---- ইত্যাদি কথাবার্তাতেও বিশ্বাস করি না, কারণ থেকে গিয়েই-বা কী হবে যখন আমরাই আর থাকব না একদিন। তবু, ভ্রমণকালে, পথচলতি নুড়িপাথর আর রোদের স্যাক্সোফোন কুড়োতে-কুড়োতে, বাজাতে-বাজাতে কিছু অক্ষর কোথাও রেখে যাওয়া প্রয়োজন মনে হয়েছিল। তাই এই  কবিতা-যাপন। 

কবিতা আশ্রম: কবিতা লিখতে আসা কেন?
সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়: একটা সময়ে মনে হয়েছিল রোজকার কথোপকথনে সব কথা, যা বলতে চাই, যেভাবে বলতে চাই, ঠিক বলে উঠতে পারছি না। সেইসব কথার গলিঘুঁজিতে নিজেই ঘুরেফিরে মরছি। তখন মনে হয়েছিল, মানুষের কাছে নিজের কথা, বিশ্বাস, স্বপ্ন আর স্বপ্নভঙ্গ নিয়ে পৌঁছোনো দরকার। কোথাও একটা সেতু গড়েতোলার প্রয়োজন।  তাই হয়তো কবিতা লিখতে আসা। 

কবিতা আশ্রম: এই বইটি সম্বন্ধে কিছু কথা পাঠকদের উদ্দেশে বলুন।  
সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়: ‘দুঃখী বাঘের থাবা আঁকা’ হিসেবমতো আমার সপ্তম বই, তবে বইটি চার ফর্মার নয়, তুলনায় কৃশকায়, দু-ফর্মার। আমার কবিতার বই নিয়ে আমার বিশেষ কিছু বলবার থাকে না সাধারণত। এই বইটির কবিতা গত দেড়-দু বছরে আমার জীবন যেভাবে পালটেছে, আমার চারপাশে যা-কিছু বদল ঘটেছে, এবং সেইসব বদলকে আমি কীভাবে আত্মস্থ করেছি বা বর্জন করতে চেয়েছি----এই সবকিছুর প্রতিফলন, এই ভাবে বলতে পারি...

কবিতা আশ্রম: আবহমান বাংলা কবিতায় আপনার বইটি নতুন কী দেবে?
সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়: তা জানি না। তবে এইটুকু বলতে পারি যে, আমি জানি, বইটি কিছু  মানুষের ভালো লেগেছে, এবং এটা আমার কাছে বড় পাওয়া। আবহমান বাংলা কবিতার মহাকাশে হয়তো এই বইটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এক তারার ঝাপসা আলো, হয়তো-বা তাও নয়। ‘ইতিকথা পাবলিকেশন’ এই বইটি খুব যত্ন নিয়ে করেছে, তাঁদের ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। এই ডিজিটাল যুগে এখনও অনেকে কবিতা লিখছেন, কবিতা পড়ছেন, কবিতার বই করতে এগিয়ে আসছেন----এ আমার কাছে আশা আর আনন্দের কথা। 



ইতিকথা পাবলিকেশন, চাঁদপাড়া, ৬০টাকা




বই উৎসব

‘প্রতিটি বাড়িরই কিছু কাহিনি থাকে’। জানি। কিন্তু খুঁজতে বসা যে কী কঠিন! আর একবার সেই বাড়ি ছেড়ে গেলে কাহিনিও হারিয়ে যায়, আর ফেরে না। সেই শহর-বাড়ির হারানো কথা নিয়ে, ছেলেবেলার হারানো পেনসিল-খাতায় ‘দুঃখী বাঘের থাবা আঁকা’ (ইতিকথা পাবলিকেশন, চাঁদপাড়া, ৬০টাকা)-র অবাক প্রচেষ্টায় নেমে পড়লেন সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সব অভিজ্ঞতা, প্রেম সম্বন্ধে নির্ভুল যত ধারণা নিয়ে কী অবসরে নিজের সামনে এসে দেখেন ‘বন্য গোলাপের ঘ্রাণ তুলে এনে/ যথারীতি, হিরণ্ময় বালক হয়ে’ যাচ্ছেন কবি। আর পাঠক, এই জীবনের সোনার হরিণ খুঁজে-খুঁজে নাকাল ব্যস্ততা থেকে সামান্য অবসর পেয়ে একবার বসলে, সিরিয়াস চশমা খুলে তাকালে, আপনিও হরিণ হয়ে যেতে পারেন। 
-------‘আমাকে মুছে দাও, অবহেলায়...’/ পাঠক সেনগুপ্ত / কবিতা আশ্রম (মুদ্রিত)/ জুন ২০১৮

অলংকরণ:মণিশঙ্কর 



No comments:

Post a Comment

।। কবিতা আশ্রম ব্লগজিন ।। তৃতীয় সংখ্যা ।। ডিসেম্বর ২০১৮ ।।

শিল্পী: চন্দন মিশ্র                                                           কথা    ফের নকশিকাঁথার ভাঁজ খুলে মাঠে-মাঠে অঘ...